ভয়ংকর বটগাছ :-
আমার এক নানা ভাইয়ের সাথে ঘটে
যাওয়া একটি ভয়ংকর ঘটনা:-
ঘটনাটি ঘটেছিলো আমার
নানা ভাইয়েরসাথে। নানা ভাই তখন
মাঝবয়সের ছিলেন।ঘরে নানু জান আর
উনাদের ২ছেলে মেয়ে নিয়ে সংসার।
পরবর্তীতে নানু জানের কাছ
থেকেইঘটনাটি শুনেছি আমি
এবংআমার অন্য ভাইবোন।নানা ভাই
আমাদের গ্রামেরইএকটা স্কুলে হেড
মাস্টারছিলেন।ঘটনা অনেক আগের।
১৯৮০সালের দিকের। তো,তখন গ্রামে
গঞ্জে বিদ্যুৎ এরতেমন প্রচলনছিল না।
বেশিরভাগ মানুষইকুপি বা হারিকেন
ব্যাবহারকরতো। নানা ভাই স্কুলথেকে
মাঝে মাঝে ফিরতেদেরি হয়ে যেত।
দেরি হয়ে গেলে উনিসেখানে নামাজ
আদায়
করে তারপর বাড়িরউদ্দেশে রওয়ানা
করতেন।
উনার কাকা বিদেশথেকে একটা টর্চ
লাইট পাঠিয়েছিলেন। সেই টর্চের
আলোইমাঝে মাঝে হতো উনার
পথচলার সম্বল।যেদিনের ঘটনা,
সেদিনওনানা ভাই একটু রাতকরে বাড়ি
ফিরছিলেন।রাস্তায় একটা পুরনো বট
গাছপড়ে।
দিনের বেলায়ওজায়গাটা কেমন যেনো
অন্ধকার অন্ধকারথাকে।একটা জমাট
বাধা বাতাসযেনো পাক খায়।
তখনগ্রামে লোকজনবলতে বেশি মানুষ
ছিল না।দেখা যেত,পুরো গ্রাম মিলে
হয়তো ২০০মানুষ। তাই সবারই সবার
সাথে চেনা জানা ছিল।যাইহোক,
নানা ভাই সেইবটগাছের কাছাকাছি
আসার সময় হঠাৎ দুটো ছায়া মূর্তির
মতন দেখতে পান। অন্ধকারে হঠাৎ
নাড়া চাড়া দেখায় তিনি একটু চমকে
যান। আস্তে করে আলো ফেলে দেখার
চেষ্টা করেন কাউকে দেখা যায় কিনা।
আলো ফেলার খানিক
আগেও যেখানে আওয়াজটা হয়েছিলো,
আলো ফেলতেই দেখলেন জায়গাটা
ফাঁকা।তবে যেখানে আওয়াজ
হয়েছিলো সেখানে কিছু বটের শাখা
নড়ছে। নানা ভাই জিজ্ঞেস করেন
ওখানে কেউ আছেন কিনা। কিন্তু
কোনো সাড়া নেই।এবার নানা ভাই
একটু সাহস নিয়ে বুকে দোয়া পড়ে
ফুঁদিয়ে এগুতে থাকেন। খানিকটা পথ
যাওয়ার পর উনার ভয় আস্তে আস্তে
কেটে যেতে লাগে। এরপর আর
খানিকটা গেলেই বাড়ি। নানা ভাই
দ্রুত পায়ে পথ
চালালেন। হঠাৎ পেছনে কারো পায়ের
আওয়াজ পাওয়া গেলো। কে যেনো পা
হেঁচড়ে হেঁচড়ে
হাঁটছে। নানা ভাই ঘুরে পেছন দিকে
টর্চ মারলেন।
একটা লোক আসছে দূর থেকে। নানাভাই
হেঁড়ে গলায় ডাক দিলেন, কেডা গো
বলে। কিন্তু কোনো উত্তর নেই। এদিকে
নানা ভাইকে চমকে দিয়ে হঠাৎ সেই
মূর্তিটা বাতাসের বেগে সামনে
আসতে লাগলো। যেনো উড়ে আসছে।
এবার নানা ভাই ভয় পেয়ে দৌড়
লাগাতে যাবেন। হঠাৎ খেয়াল
করলেন, মূর্তিটার চোখ এই অন্ধকারেও
জ্বলজ্বল করছে। অনেকটা পশুর মত।
কিন্তু বলা বাহুল্য, সে সময় ভাল্লুক বা
ঐ জাতীয় কোনো পশু এমন
করে পথে ঘাঁটে উঠে আসতো না। আর
সেই মূর্তিটা একজন স্বাভাবিক
মানুষের আকৃতি নিয়েই এগুচ্ছিল। নানা
ভাই আর সহ্য করতে পারলেন না। ঝেরে
দৌড় মারলেন পেছনে ঘুরে দৌড় মেরে
কিছুদূর যেতেই পিঠে কিছুর ছোঁওয়া
অনুভব
করলেন। ধাড়ালো কোনো কিছুর আঁচড়
মনে হল। নানা ভাই, চিৎকার করে
আরো জোরে দৌড়
লাগালেন। এবার পেছন থেকে সেই
মূর্তিটা (হয়তো,কারন সেটি কি ছিল
তা নানা ভাইদেখতে পারেননি) এসে
ধাক্কা দিয়ে উনাকে ফেলে দিল।
জ্ঞান হারানোর আগে নানা ভাইয়ের
শুধু এতটুকুই
মনে ছিল। পরদিন উনাকে পথের পাশের
এক ধানক্ষেত থেকে উদ্ধার করা হয়।
উনার পিঠে রক্তের মাখামাখি। সবাই
মিলে ধরাধরি করে বাসায় আনার পর
গ্রামের চিকিৎসক উনাকে প্রাথমিক
চিকিৎসা করেন। উনার পিঠে বড় বড়
নখের আঁচড় লক্ষ্য করা যায়। সেগুলো
এতো গভীর ছিল যে অনেকটা কেটে
ভেতরে ঢুকে গিয়েছিলো। নানা
ভাইকে জরুরী ভাবে ঢাকায়
এনে চিকিৎসা করা হয়। উনি প্রায়
১মাস পর সুস্থ
হয়ে উঠেন। এরপরের দিন সেই বট গাছের
ডালে একজনের ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়।
সেই লোকটা কে ছিল তা ঐ গ্রামের
মানুষের অজানা। সেই রহস্য
অমীমাংসিতই থেকে যায়।
বিশ্বাস এবং অবিশ্বাস সম্পূর্ণ
আপনাদের ব্যাপার।
বিঃদ্রঃ ভুল ক্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে
দেখবেন।
0 Comments